বাংলাভয়েস.নিউজ
নিউজ ডেস্ক :: তিনি ফকির সাহেব, যিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে ভাইরাল এক গায়ক। কিন্তু তাঁর কোন ইউটিউব চ্যানেল নেই। তার গাওয়া গান ইউটিউবে আপলোড দিয়ে টাকা কামাচ্ছেন অন্যরা।
তিনি জীবন যুদ্ধে অগ্রসরমান এক সৈনিক, যিনি সামনে এগিয়ে যাওয়ায় বদ্ধ পরিকর।
বলা হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফকির সাহেব বা ওয়াজকুরুনী ফকির এর কথা।
গান গেয়ে আর শুনিয়ে যার মনে তৃপ্তি আসে সেই ফকির সাহেব কাজ করেন মোটরসাইকেল গ্যারেজে। গান শুনে অনেকে তাকে টাকা দিতে চান কিন্তু তার মায়ের যে নিষেধ আছে।
তাই গ্যারেজে কাজ করে নিজের স্বল্প খরচটুকু ও পড়শোনার খরচটুকু চালিয়ে নেন তিনি।
লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা থানার গাওচুল্বা গ্রামের সাধু ও মোমেনা বেওয়ার দুই মেয়ে ও এক ছেলে।
ফকির সাহেব হাতিবান্ধা এস এস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি (৪.৬৩) ও আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন।
কিন্তু এরপরই টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে যায় তার পড়াশোনা।
দেখুন-
এসময় তার ঘনিষ্ঠ বন্ধ আশরাফুজ্জামান দিদার ফকির সাহেব এর সকল পড়াশোনার খরচ বহন করেন।
এই ছোটবেলার বন্ধুই তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম ও ভর্তির সকল খরচ বহন করেন।
৯ বছর বয়সে ফকির সাহেব ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের এক গুরুর কাছে ৫ বছর দেহতত্ত্ব ও মারফতি গানের শিক্ষা গ্রহণ করেন।
‘ভাব আছে যার গায়, দেখলে তারে চেনা যায়, সর্ব অঙ্গ তাহার পোড়ারে’ তার গাওয়া জনপ্রিয় একটি দেহতত্ত্ব গান।
২০০০ সালে ফকির সাহেবের বাবা মারা গেলে অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হয়েছে তাঁদের।
তিনবেলা ভাত খেতে পারবে বলে একটি বেসরকারি সংস্থায় নামও লিখিয়েছেন। তবে থেমে থাকেননি ফকির সাহেব। অদম্য ইচ্ছা আর পরিশ্রমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছেন।
দেহতত্ত্ব ও মারফতি গানের তালিম নেয়া ফকির সাহেব ভবিষ্যতে বড় ধরনের গায়ক হবার ইচ্ছা রয়েছে বলেও জানান।
ফকির সাহেব বলেন, বাবার মুখের শোনা ‘ভাব আছে যার গায়, দেখলে তারে চেনা যায়, সর্ব অঙ্গ তাহার পোড়ারে’ সবচেয়ে প্রিয় গান এখন ক্যাম্পাসেও অনেকে শুনতে চায়।’
‘অর্থ আমি পরিশ্রম করে কামিয়ে নিব কিন্তু গান আর দেহতত্ত্বের সারকথা শুনিয়ে যে আনন্দটুকু পাই তার কাছে অন্য সবকিছু মলিন।’
দেখুন-
বি.ভ/এন.এম